SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

বাংলা - Bangla - শব্দ বুঝি বাক্য লিখি - বানান ও অভিধান

শব্দে বর্ণের বিন্যাসকে বানান বলে। প্রতিটি শব্দের সুনির্দিষ্ট বানান থাকে। লিখিত ভাষায় শব্দের এই সুনির্দিষ্ট বানান অনুসরণ করতে হয়।

অভিধান এমন একটি বই যেখানে কোনো ভাষার যাবতীয় শব্দের বানান, উচ্চারণ, অর্থ, গঠন, উৎস, ব্যবহার ইত্যাদি সংকলিত হয়। অভিধানের শব্দগুলো বর্ণের ক্রম অনুযায়ী সাজানো থাকে।

Content added By

বাংলা বর্ণমালায় বর্ণগুলো যেভাবে সাজানো থাকে, অভিধানে বর্ণের ক্রম তার থেকে একটু ভিন্ন। অভিধানে বর্ণের ক্রম নিম্নরূপ:

অআইঈউউঋ এ ঐ ও ঔংঃঁ

ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ট ঠ ড ড় ঢ় ঢ় ণ ত (ৎ) থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য য় র ল শ ষ স হ।

নিচের বাম কলামের শব্দগুলোকে অভিধানের বর্ণক্রম অনুযায়ী সাজিয়ে ডান কলামে লেখো। লেখা শেষ হলে সহপাঠীর সঙ্গে মিলিয়ে দেখো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো। একটি করে দেখানো হলো।

 

 

এলোমেলো শব্দ

বর্ণক্রম অনুযায়ী সাজানো শব্দ

তাল পাটি দই আতা জাহাজ টমেটো শশা

 

আতা জাহাজ টমেটো তাল দই পাটি শশা

 

কাক কৃতজ্ঞ কোল কৌতুক কুলা কলা

 

 

তিসি তুলনা তুলা তাল তারুণ্য

 

 

পরিবর্তন একতা ভয় আজ শহর গ্রাম

 

 

জুঁই ঝাল চাঁদ জামা জাঁতা চিল ছাল চাই

 

 

নকশা নির্ভয় নিঃশঙ্ক নিঃসংকোচ নিষ্পেষণ নিদ্রা

 

 

রাক্ষস ব্যয় স্বাধীনতা স্বার্থ সার্থক ভ্রাতা শ্মশান রশ্মি

 

 
Content added || updated By

নিচে কাজী মোতাহার হোসেনের (১৮৯৭-১৯৮১) লেখা একটি প্রবন্ধের অংশবিশেষ দেওয়া হলো। কাজী মোতাহার হোসেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক। তাঁর প্রবন্ধের প্রধান বিষয় বিজ্ঞান, সাহিত্য ও সংস্কৃতি। তিনি ঢাকার 'মুসলিম সাহিত্য সমাজ' নামের একটি যুক্তিবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে আছে 'সঞ্চয়ন', 'সেই পথ লক্ষ্য করে', 'আলোকবিজ্ঞান' ইত্যাদি।

 

নিচের লেখায় কিছু শব্দের বানান পরিবর্তন করে দেওয়া হলো। শব্দগুলো সবুজ রঙে চিহ্নিত করা আছে। এসব শব্দের বানান অভিধানের সহায়তা নিয়ে ঠিক করো।

 

 

শিক্ষা-প্রসঙ্গে

কাজী মোতাহার হোসেন

 

 

কোন জাতী কতটা সভ্য, তা নির্নয় করবার সবচেয়ে উৎকৃস্ট মাপকাঠি হচ্ছে তার শিক্ষাব্যাবস্থা, পাঠ্যপুস্তক ও সাধারণ সাহিত্য। এ সবের ভিতর দিয়ে জাতির আশা-আকাংখা পরিস্ফুট হয়; নৈতিক ও সামাজিক মানের পরিমাপ করা যায়; এবং কর্মক্ষমতা, চরিত্রগত বৈশিষ্ট, এক কথায় জাতীয় আদর্শের ভিত্তি-ভূমির সঙ্গে পরিচয় ঘটে। জাতিয় ঐতিহ্য অবশ্যই অতীতের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং বর্তমানের চেষ্টায় পরিপুস্ট হয়। তাছাড়া এর ভবিষ্যৎ স্থায়ীত্ব ও উন্নতির জন্য শিশু, কিশোর ও নওজোয়ানদের উপযুক্তভাবে প্রস্তুত করে দিতে হয়। এই শেষোক্ত কাজটি বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার উপরেই সর্বাধিক নির্ভর করে। তাই শিক্ষাব্যবস্থার এত গুরুত্ব। 

মায়ের পেট থেকে পড়েই শিশুর শিক্ষা আরম্ভ হয়। কিন্তু এর আগে পিতামাতার মনবৃত্তি, পারস্পরিক সম্পর্ক, দৈহিক দোষগুণ প্রভৃতির প্রভাব কিছুটা উত্তরাধীকার-সূত্রে শিশুর উপর বর্তে। এই কারণে বয়ষ্কদেরও বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। দুঃখের বিষয়, আমাদের দেশে এই ধরনের শিক্ষার অস্তিত্ত নেই বললেই চলে। ফলে, অনেক দম্পতিকেই সারা জীবন শিশুর পরিবেশ-সৃষ্টি এবং বাল্যশিক্ষার ব্যবস্থায় অসংখ্য ভুল করে শেষ জীবনে পস্তাতে দেখা যায়।

উন্নত দেশে দুই থেকে পাঁচ-ছয় বছর বয়সের শিশুর শিক্ষায় প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়। এই বয়সে অনেক শিশু স্কুলে একত্র জড়ো হয়ে খেলাধুলা করে, নক্সা আঁকে, কাঠের বা মোটা কাগজের টুকরো জোড়া দিয়ে অনেক রকম প্যাটার্ন বা আকৃতি তৈরী করে; চিত্র-বিচিত্র বইয়ের ছবি দেখে, কাঠের অক্ষর দিয়ে খেলা করতে করতে শব্দ তৈরি করতে শেখে, বস্তু গণনা করতে করতে সংখ্যার ধারণা লাভ করে, আশে-পাশের সাধারণ জিনিষ ও পশু-পাখীর নাম শেখে, মজার মজার ছড়া আবৃত্তি করে। এই ধরণের ক্রিয়াকলাপের মধ্য দিয়ে সহজে ও স্বাধীনভাবে তাদের আপন আপন স্বাভাবিক বৃত্তিগুলোর চর্চা হতে থাকে। শিক্ষক বা শিক্ষয়িত্রীরা ধৈর্য্য ধরে অনেকটা অলক্ষ্যে প্রত্যকটি শিশুর বিশেষ প্রবনতা লক্ষ করে সেইসব দিকে ওদের বিকাশ লাভের সুযোগ করে দেন। এইভাবে, বেত ও ধমকের সাহায্য ছাড়াই শিশুরা আনন্দের সঙ্গে শিক্ষা লাভ করে। আমাদের দেশে এর কতকটা আরম্ভ হয়েছে।

আমরা বিলেতি পদ্ধতির স্কুলে কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের পাঠিয়ে ইংরেজী বোল শেখাচ্ছি, আর এইসব ছেলেমেয়ে ইংরেজির মাধ্যমে শিক্ষালাভ করে নিজেদেরকে দেশের লোকের থেকে স্বতন্ত্র বলে ভাবতে শিখছে। এতে উক্ত স্কুলসমূহের পরিচালকদের অর্থাগমের সুবিধা হচ্ছে বটে, কিন্তু ছোটো ছোটো ছেলেরা দেশের লোকের কাছে পর বনে যাচ্ছে। আমাদের নিজেদের বাল্যশিক্ষার কোনো প্রকার ব্যবস্থা না থাকাতেই দেশের বড়োলোকেরা বহু অর্থ ব্যায় করে এই ধরনের শিক্ষার সহায়তা করবার একটা মস্ত অজুহাত পেয়েছেন। আসল কথা, যতদিন আমরা মাতৃভাষাকে সম্মান দিতে না পারব, যতদিন আমরা বিদেশী ভাষাকেই উচ্চ চাকুরির সোপান বলে জানব, যতদিন আমাদের কাজে দেশিয় ঐতিহ্যের চেয়ে বৈদেশিক চাকচিক্যই অধিক মনোহর বলে বোধ হবে, ততদিন পর্যন্ত শিক্ষা-সংস্কার নিরর্থক হয়েই থাকবে।

 

অভিধান দেখে বানানগুলো ঠিক করে নিচে লেখো।

 

 

যে কোনো শব্দের বানান নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে অভিধান দেখে ঠিক করে নেওয়া যায়।

Content added || updated By